কবিতা- কবিমঙ্গল

কবিমঙ্গল

-বিকাশ দাস 

কবিতা
কিছুটা সত্যি কিছুটা মিথ্যে শব্দ ধ্বনির জ্বালা
কবির কলমে ।
গোপন দুঃখকষ্ট গাঁথা কবির বুকের শঙ্খমালা
শব্দের মলমে।
কবি বুঝতে পারেন
নারীকে স্পর্শ না করে নারীকে নিয়ে কবিতা লেখা
কতখানি বিদ্যুৎচমক কঠিন ।
কোনদিন নিজেকে মানুষ হয়ে না পারার দেখা
কতটা চশমার কাচ দৃষ্টিহীন ।
কাগজের উপর শব্দের ভিড় চাপিয়ে দিলে
কবিতার মঙ্গল মিছিল নয় ।
কবিতার বুকে পিঠে শব্দের আঁচড় দিলে
বাদ প্রতিবাদের দলিল নয় ।

শব্দের মৃত্যু
শহিদ হলে কবিতার উদযাপন ।
বধ হলে শ্রদ্ধাঞ্জলির বিজ্ঞাপন ।
যে যার মতো চলে যায় এর ওর গন্ধ শুঁকে
এক সংসার থেকে অন্য এক সংসারের সুখে
কবিতা পাপোশের মতো নির্বাক চেয়ে মুখে
শব্দের সুবাসে সম্পর্ক বেঁধে বেঁধে ঘর প্রান্তর ।

কবি
শব্দ মঞ্জুরীর আকাশ নামিয়ে মাটিতে ফুলের আঁচে
শব্দের বিস্তার গলিয়ে
নিভৃতে কবিতার উত্তরীয় বিছিয়ে
প্রখর সুখী শব্দের তৃণে শিশির ভিজিয়ে ।
কবি
মঙ্গল চেয়ে শব্দের মঙ্গলগ্রহ ধরে রাখেন পরাণে
নদ নদীর বাঁক ভেঙে ভেঙে শব্দ সাগর উজানে ।
কবির দুঃখ
কখন মানুষ মরলে স্বর্গ পায়
কখন মানুষ মরলে নরকে যায়
কেউ কি জানতে পারে কে কোথায় যায় ?
ঠোঁটের কাঁপুনিতে স্বার্থ, দিব্যি তৃষ্ণা রোমাঞ্চ মেখে
রেখে যায় স্মৃতি কবিতায় কবিতায় ।

যে হাতে চিতার আগুন জ্বেলে আসে
সে হাতে কলসির জল ঢেলে আসে
শব্দ খোঁজে পাগল করা অন্ত্যমিল
আঙুল ছন্দের গন্ধে জমাট হিম
শব্দ ভেঙে আর এক শব্দের সমাস সন্ধি বুঝে নিতে মরিয়া ।

কবির কলমে কলমে
কবিতার চোখে মুখে শরীরে শব্দের বাতাস হয়ে ফিরলে
কবিতার কাঠে আগুন লাগে ধোঁয়ার স্পর্শে বোধন জাগে
কবি
নিজের জন্মান্তর বয়সের উপর ভর দিয়ে হেঁটে যায়
দু’হাতে একগুচ্ছ মেঘ শব্দের আবেগ হাওয়ায়
বজ্রমণি বৃষ্টির পায়ে পায়ে ঘুঙুর
লক্ষ্মী ধানের বুকে ভিজে মাটির সুর
কবিতার জমিনে আকাশি আলোর কোহিনুর
সরস্বতী শব্দের মোহন বীণায় উপোষী আঙুলে অস্থির ধ্বনি
কবিমঙ্গল কলমগাথা ।
***

Loading

Leave A Comment